একটি মোরগের কাহিনী-সুকান্ত ভট্টাচার্য

একটি মোরগ হঠাৎ আশ্রয় পেয়ে গেল

বিরাট প্রাসাদের ছোট্ট এক কোণে,

ভাঙা প্যাকিং বাক্সের গাদায়—

আরো দু’তিনটি মুরগীর সঙ্গে ।

আশ্রয় যদিও মিলল,

উপযুক্ত আহার মিলল না ।

সুতীক্ষ্ণ চিৎকারে প্রতিবাদ জানিয়ে

গলা ফাটাল সেই মোরগ

ভোর থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত—

তবুও সহানুভূতি জানাল না সেই বিরাট শক্ত ইমারত ।

তারপর শুরু হল তার আঁস্তাকুড়ে আনাগোনা :

আশ্চর্য ! সেখানে প্রতিদিন মিলতে লাগল

ফেলে দেওয়া ভাত-রুটির চমৎকার প্রচুর খাবার !

তারপর একসময় আঁস্তাকুড়েও এল অংশীদার—

ময়লা ছেঁড়া ন্যাকড়া পরা দু’তিনটে মানুষ ;

কাজেই দুর্বলতর মোরগের খাবার গেল বন্ধ হয়ে ।

খাবার ! খাবার ! খানিকটা খাবার !

অসহায় মোরগ খাবারের সন্ধানে

বার বার চেষ্টা ক’রল প্রাসাদে ঢুকতে,

প্রত্যেকবারই তারা খেল প্রচন্ড ।

ছো্ট্ট মোরগ ঘাড় উঁচু করে স্বপ্ন দেখে–

”প্রাসাদের ভেতর রাশি রাশি খাবার” ।

তারপর সত্যিই সে একদিন প্রাসাদে ঢুকতে পেল,

একেবারে সোজা চলে এল

ধবধবে সাদা দামী কাপড়ে ঢাকা খাবার টেবিলে ;

অবশ্য খাবার খেতে নয়–

খাবার হিসেবে ।।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *