বর্ষা-সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত [Barsha-satyendra nath dutta

ছন্দের কবিতা :

ঐ দেখো গো আজ্কে আবার পাগলি জেগেছে,
ছাই মাখা তার মাথার জটায় আকাশ ঢেকেছে!
মলিন হাতে ছুঁয়েছে সে ছুঁয়েছে সব ঠাঁই,
পাগল মেয়ের জ্বালায় পরিচ্ছন্ন কিছুই নাই।

মাঠের পাড়ে দাঁড়িয়েছিল ঈশান কোণেতে,-
বিশাল-শাখা পাতায় ঢাকা শালের বনেতে;
হঠাৎ হেসে দৌড়ে এসে খেয়ালের ঝোঁকে,
ভিজিয়ে দিলে ঘরমুখো ঐ পায়রাগুলোকে!

বজ্রহাতের হাততালি সে বাজিয়ে হেসে চায়,
বুকের ভিতর রক্তধারা নাচিয়ে দিয়ে যায়;
ভয় দেখিয়ে আসে আবার ফিক্ ফিকিয়ে সে,
আকাশ জুড়ে চিকমিকিয়ে চিকমিকিয়ে রে!

ময়ূর বলে ‘কে গো ?’এ যে আকুল করা রূপ!
ভেকেরা কয় ‘নাই কোন ভয়’ জগৎ রহে চুপ;
পাগলি হাসে আপন মনে পাগলি কাঁদে হায়,
চুমার মতো চোখের ধারা পড়্ছে ধরার গায়।

কোন্ মোহিনীর ওড়্না সে আজ উড়িয়ে এনেছে,
পুবে হাওয়ায় ঘুমিয়ে আমার অঙ্গে হেনেছে;
চমকে দেখি চক্ষে মুখে লেগেছে এক রাশ,
ঘুম পাড়ানো কেয়ার রেণু, কদম ফুলের বাস!

বাদল হাওয়ায় আজ্কে আমার পাগলি মেতেছে;
ছিন্ন কাঁথা সূর্যশশীর সভায় পেতেছে!
আপন মনে গান গাহে সে নাই কিছু দৃকপাত,
মুগ্ধ জগৎ মৌন দিবা, সংজ্ঞাহারা রাত!