মৃত্যুঞ্জয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [Mrittunjay-Rabindra Nath Thakur ]

দূর হতে ভেবেছিনু মনে–
দুর্জয় নির্দয় তুমি, কাঁপে পৃথ্বী তোমার শাসনে।
তুমি বিভীষিকা,
দুঃখীর বিদীর্ণ বক্ষে জ্বলে তব লেলিহান শিখা।
দক্ষিণ হাতের শেল উঠেছে ঝড়ের মেঘ- পানে,
সেথা হতে বজ্র টেনে আনে।
ভয়ে ভয়ে এসেছিনু দুরুদুরু বুকে
তোমার সম্মুখে।

তোমার ভ্রুকুটি ভঙ্গে তরঙ্গিলো আসন্ন উৎপাত,
নামিলো আঘাত।
পাঁজর উঠিল কেঁপে,
বক্ষে হাত চেপে
শুধালেম, “আরো কিছু আছে নাকি–
আছি বাকি শেষ বজ্রপাত?
নামিল আঘাত।।

এইমাত্র ? আর কিছু নয়?
ভেঙে গেল ভয়।
যখন উদ্যত ছিল তোমার অশনি
তোমারে আমার চেয়ে বড়ো বলে নিয়েছিনু গণি।
তোমার আঘাত- সাথে নেমে এলে তুমি
যেথা মোর আপনার ভূমি।
ছোট হয়ে গেছো আজ।
আমার টুটিলো সব লাজ।
যত বড়ো হও, তুমি তো মৃত্যুর চেয়ে বড়ো নও।
” আমি মৃত্যু- চেয়ে বড়ো” এই শেষ কথা ব’লে
যাব আমি চলে।।
( পরিশেষ: ১৭ই আষাঢ় ১৩৩৯)||