হারিয়ে যাওয়া//রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ছোট্ট আমার মেয়ে

সঙ্গীনীদের ডাক শুনতে পেয়ে

সিঁড়ি দিয়ে নীচের তলায় যাচ্ছিল সে নেমে

অন্ধকারে ভয়ে ভয়ে ,থেমে থেমে ।

হাতে ছিল প্রদীপখানি,

আঁচল দিয়ে আড়াল করে চলছিল সাবধাণী ।।

আমি ছিলাম ছাতে

তারায় -ভরা চৈত্রমাসের রাতে ।

হঠাৎ মেয়ের কান্না শুনে উঠে

দেখতে গেলেম ছুটে ।

সিঁড়ির মধ্যে যেতে যেতে

প্রদীপটা তার নিভে গেছে বাতাসেতে ।

শুধাই তারে, ”কী হয়েছে বামি ?”

সে কেঁদে কয় নীচে থেকে, ”হারিয়ে গেছি আমি ।”

তারায়-ভরা চৈত্র মাসের রাতে

ফিরে গিয়ে ছাতে

মনে হল আকাশ-পানে চেয়ে ,

আমার বামির মতোই যেন অমনি কে এক মেয়ে

নীলাম্বরের আঁচলখানি ঘিরে

দীপশিখাটি বাঁচিয়ে একা চলছে ধীরে ধীরে ।

নিবত যদি আলো ,যদি হঠাৎ যেত থামি,

আকাশ ভরে উঠত কেঁদে ”হারিয়ে গেছি আমি !”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *