ঘোড়া //নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

”কাল থেকে ঠিক পাল্টে যাব

দেখে রাখিস তোরা ,”

বলতে-বলতে ঘুমিয়ে পড়ল অশ্বমেধের ঘোড়া

পথের মধ্যিখানে ।।

ভেবেছিলুম, যে দিকে যাই, জ্বালতে-জ্বালতে যাব

শহর-গঞ্জ কারখানা-কল, কিন্তু এখন প্রাণে

অন্যরকম ভুজুং দিচ্ছে অন্যরকম হাওয়া ।

”এই নে , তোকে দিলুম বাড়ি, নতুন খড়ে ছাওয়া,

দিলুম আগরতলার শীতলপাটি ।

কৃষ্ণা গাভীর দুগ্ধ দিলুম,বড্ডরকম মিঠে,

এবং সোঁদরবনের মধু,চোদ্দো-আনা খাঁটি ।”

শুনেই আমি চমকে উঠি,পথের শক্ত ইঁটে

লাথি কষাই, হাওয়ার মধ্যে কোড়া

ঘুরিয়ে বলি, ”আয় রে আমার অশ্বমেধের ঘোড়া ;

আয়,যেরকম কথা ছিল, তেমনি করে বাঁচি ।”

তেমনি করে কেউ বাঁচে না, নেই -কুসুমের তোড়া

কেউ বাঁধে না,কোত্থেকে জল কোথায় চলে যাচ্ছে ।

নজর করলে দেখতে পাবি,রক্ত শুষে খাচ্ছে

অশ্বমেধের ঘোড়ার পিঠে রাক্ষুসে এক মাছি ।।

(বৈশাখ,১৩৮২ )

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *